প্রতিনিধি সাগর চন্দ্রর দাস :হিন্দুদের পালনীয় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। হিন্দুধর্মে দেবতা, বিশিষ্ট ব্যক্তি অথবা অতিথিদের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। স্থান ও কালভেদে বিভিন্ন প্রকার পূজানুষ্ঠান এই ধর্মে প্রচলিত। যথা, গৃহে বা মন্দিরে নিত্যপূজা, উৎসব উপলক্ষে বিশেষ পূজা অথবা যাত্রা বা কার্যারম্ভের পূর্বে কৃত পূজা ইত্যাদি। পূজানুষ্ঠানের মূল আচারটি হল দেবতা ও ব্যক্তির আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য তাঁদের উদ্দেশ্যে বিশেষ উপহার প্রদান। পূজা সাধারণত গৃহে বা মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়। পূজার বিভিন্ন প্রকারভেদও রয়েছে।দুর্গাপুজা বা কালীপুজার মতো উৎসবগুলি প্রকৃতপক্ষে পূজাকেন্দ্রিক উৎসব। অনেক হিন্দুগৃহেই নির্দিষ্ট ঠাকুরঘর বা উপাসনাস্থল রয়েছে। ঠাকুরঘরে দেবদেবীর ছবি বা মূর্তি রাখা থাকে। এই ঘরেই কুলদেবতা (পারিবারিক দেবতা) ও ইষ্টদেবতার (নিজস্ব দেবতা) নিত্যপূজা হয়ে থাকে। ঘরের নিত্যপূজা খুব সাধারণভাবে করা হয়ে থাকে। এই পূজায় দেবতার উদ্দেশ্যে ধূপ, দীপ, জল ও ফল উৎসর্গ করা হয়। পূজার পর ছোটো করে আরতিও করা হয়ে থাকে। পূজার সময় জপধ্যান ও দেবদেবীর মন্ত্র ও স্তবস্তুতি পাঠের প্রথা রয়েছে।মন্দিরের পূজা বিস্তারিতভাবে করা হয়ে থাকে। অনেক মন্দিরেই দিনে একাধিকবার পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পূজা সাধারণত পুরোহিত সম্পাদনা করে থাকেন। তাছাড়া, মন্দিরের দেবতা অতিথি দেবতা নন, তিনি মন্দিরের অধিবাসী। তাই তাঁর পূজায় সেই দিকটির কথা মনে রাখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, মন্দিরে সকালে দেবতাকে জাগরিত করা হয়, তাঁকে আবাহন করা হয় না। অঞ্চল ও সম্প্রদায় ভেদে মন্দিরের পূজায় নানান প্রথা লক্ষিত হয়। মন্দিরের পূজায় পুরোহিতই সকলের হয়ে পূজা নিবেদন করেন। ঘরের বা মন্দিরের পূর্ণাঙ্গ পূজায় একাধিক উপচার বা পূজাদ্রব্য দেবতাকে উৎসর্গ করার প্রথা রয়েছে। এই উপচারগুলি অঞ্চল, সম্প্রদায় বা সময় ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়।[পূজার কয়েকটি সাধারণ উপচার হল আবাহন, আসন, স্বাগত, পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয়, মধুপর্ক, স্নান বা অভিষেক, বস্ত্র, অনুলেপনা বা গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, চাঁদমালা, মালা, বিল্বপত্র, প্রণাম ও বিসর্জন।
Leave a Reply