প্রতিনিধি জুবায়ের বয়ান : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা করেছেন তাদের বাবা ইটভাটা শ্রমিক ইসমাইল হোসেন। মামলায় শিশুদের মা লিমা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক সফিউল্লাহকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় লিমা বেগমকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) ভোরের দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নাপা সিরাপ খেয়ে শিশু দুটির মৃত্যু হয় বলে দাবি করেছিলেন লিমা বেগম। তবে শিশু দুটির মৃত্যুর ঘটনা ‘পরিকল্পিত’ বলছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ‘লিমা বেগম একটি চাতাল কলের শ্রমিকের কাজ করেন। সেখানে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে চাতালের সর্দার সফিউল্লাহর সঙ্গে। সফিউল্লাহ তাকে বিয়ে করার আশ্বাস দেন। কিন্তু শর্ত দেন দুই সন্তানকে সরিয়ে ফেলতে হবে। পরে লিমা পরিকল্পনা করে ১০ মার্চ দুই শিশুকে মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দেন। এতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ এনে খাওয়ান। পরে নাটক সাজান শিশু দুইটি নাপা সিরাপ খেয়ে মারা গেছে।’‘বিষয়টি প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচিত হয়। কল লিস্টের সুত্র ধরে আমরা কাজ করি। এরই মধ্যে তিনি (লিমা বেগম) তার দোষ স্বীকার করেন’, যোগ করেন ওসি আজাদ রহমান।
‘অবস্থার অবনতি হলে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের জেলা সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিলে পথে রাত ৯টার দিকে ইয়াসিনের মৃত্যু হয়। পরে রাত ১০টার দিকে মোরসালিনও মারা যায়।’এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।সেই সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘নাপা সিরাপ’ বিক্রির নির্দেশ দেয় জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের যে ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ কেনা হয়েছিল, সেখান থেকে জব্দ করা বাকি সিরাপ পরীক্ষায় মান সঠিক পাওয়া গেছে বলে জানায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
Leave a Reply