বিশেষ প্রতিনিধি: আফজালুর রহমান উজ্জল, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় লেবানন ফেরত স্ত্রী হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় স্বামী ছমির উদ্দিন (৫৭) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এই জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। আসামি ছমির উদ্দিনের উপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছমির উদ্দিন পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার সৈয়দগাঁও পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের শিকার লেবানন ফেরত গৃহবধূ মোছা. মর্জিনা আক্তার (৩৫) পার্শ্ববর্তী সৈয়দগাঁও গ্রামের নূরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি তিন সন্তানের জননী এবং ঘাতক ছমির উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, মোছা. মর্জিনা আক্তার পাঁচ বছর লেবাননে প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই দেশে ফিরে আসেন।তিনি লেবাননে অবস্থানকালে টাকা পাঠানো নিয়ে স্বামী ছমির উদ্দিনের সঙ্গে দ্ধন্দ্ব সৃষ্টি হয়। আর এ কারণে তিনি দেশে ফিরে স্বামীর পরিবর্তে সৈয়দগাঁও গ্রামে বাবার বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। দেশে ফেরার তিন দিন পর ১৪ জুলাই সকালে ছমির উদ্দিন শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রী মর্জিনা আক্তারের পেটে ছোরা দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষ অবস্থায় এলাকাবাসী মর্জিনা আক্তারকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে একটি পাটক্ষেতে আত্মগোপনরত ছমির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ মর্জিনা আক্তারের বাবা নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় ছমির উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাকুন্দিয়া থানার উপ-পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির একই বছরের ২৪ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।দীর্ঘ সাক্ষ্য-শুনানি শেষে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় আজ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আব্দুছ ছালাম এবং আসামি পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেসমিন আরা রোজী মামলাটি পরিচালনা করেন।
Leave a Reply