প্রতিনিধি নুরুজ্জামান : কিশোরগঞ্জের ৭টি পৌরসভাসহ দেশের ২৩৪ টি পৌরসভার নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এমন প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে। আর এই লক্ষ্য নিয়ে ইসি সচিবালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।
২২ আগষ্ট রোববার অনুষ্ঠিত কমিশনের সভায় এ ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রমতে, ওই বৈঠকে এজেণ্ডার বাইরে পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ আলোচনায় পৌরসভাগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসকে সম্ভাব্য সময় ধরে নির্বাচন আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ইতিপূর্বে ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিত কমিশন সভায়ও অভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ভোট গ্রহণের ওই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পৌরসভাগুলোর বর্তমান পরিষদের মেয়াদ, নির্বাচন আয়োজনে কোথাও কোনো সমস্যা আছে কিনা ইত্যাদি পূর্ণাঙ্গ তথ্য চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি সচিবালায়।
কয়েকদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়কে এমন চিঠি দেয়া হবে বলে ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এক-ই সঙ্গে নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কমিশন মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমেও পৌরসভাগুলোর মেয়াদসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের মোট ৩০০ পৌরসভার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর একযোগে ২৩৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
অন্য দিকে, বাকি পৌরসভাগুলোর ভোট মেয়াদ অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর যেসব পৌরসভার নির্বাচন হয়েছিল, এসবের অধিকাংশ মেয়র ও কাউন্সিলরগন পরের বছর ২০১৬ সালের জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারি মাসে শপথ গ্রহণ করেন। ফেব্রুয়ারির মাসের মধ্যেই তাদের প্রথম সভাও অনুষ্ঠিত হয়।
এ হিসেব মতে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।
পৌর নির্বাচন আইন অনুযায়ী, পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সুতরাং, প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত যেসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে, সেসব পৌরসভায় নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্য ভাগে নির্বাচন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। তবে, ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে দেশে প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীকে এসব স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয়। জেলা পরিষদ ব্যতীত সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে দলীয় প্রতীকে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, ২০১৫ সালের মতো সকল পৌরসভার নির্বাচন একদিনে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া পৌরসভাগুলো সদর এলাকায় থাকার কারণে ইভিএম এর ব্যবহার বাড়ানোর চিন্তা রয়েছে। কমিশন সভায় এমন প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হলেও করোনা পরিস্থিতির অগ্রগতি না হলে ইভিএম ব্যবহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শিথিল রাখার ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা থাকবে।
এমনকি, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর স্কুল খোলা এবং বার্ষিক পরীক্ষার তারিখ বিবেচনা করে পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখও নির্ধারণ করা হবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানায়, ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর ২৩৪টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করা হয় এবং ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই তালিকামতে এবারও ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
ডিসেম্ভরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তালিকায় থাকা কিশোরগঞ্জের ৭ পৌরসভাসহ দেশের ২৩৪টি পৌরসভা :
টাঙ্গাইল সদর, ধনবাড়ী, মধুপুর, মির্জাপুর, ভুঞাপুর, সখিপুর, গোপালপুর, কালীহাতি, জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, শেরপুর সদর, নকলা, নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, ত্রিশাল, ভালুকা, গফরগাও, নান্দাইল, ফুলপুর, ফুলবাড়িয়া, নেত্রকোনা সদর, মদন, মোহনগঞ্জ, দুর্গাপুর, কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জ সদর, কুলিয়ারচর, হোসেনপুর, কটিয়াদী, বাজিতপুর, ভৈরব, করিমগঞ্জ, মানিকগঞ্জ সদর, সিংগাইর, মুন্সীগঞ্জ সদর, মিরকাদিম, ঢাকার ধামরাই, সাভার, নরসিংদী সদর, মাধবদী, মনোহরদী, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাও, তারাবো, রাজবাড়ী সদর, পাংশা, গোয়ালন্দ, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, নগরকান্দা, গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গীপাড়া, মাদারীপুর সদর, কালকিনি, শিবচর, শরীয়তপুর সদর, নড়িয়া, ডামুড্যা, জাজিরা, ভেদরগঞ্জ পৌরসভা।
ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কুমিল্লার চান্দিনা, লাকসাম, দাউদকান্দি, বরুড়া, চৌদ্দগ্রাম, হোমনা, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ছেংগারচর, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, মতলব, ফেনী সদর, দাগনভুইঞা, পরশুরাম, নোয়াখালীর বসুরহাট, চৌমুহনী, হাতিয়া, চাটখিল, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, রামগতি, রায়পুর, চট্টগ্রামের সন্দীপ, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, মীরসরাই, বারাইয়ারহাট, পটিয়া, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ডু, খাগড়াছড়ি সদর, মাটিরাঙা, রাঙামাটি সদর, বান্দরবান সদর ও লামা পৌরসভা।
মেহেরপুরের গাংনী, কুষ্টিয়া সদর, মিরপুর, ভেড়ামারা, কুমারখালী, খোকসা, খুলনার পাইকগাছা, দাকোপের চালনা, চুয়াডাংগা সদর, দর্শনা, জীবননগর, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, হরিণাকুণ্ডু, শৈলকূপা, যশোর সদর, নওয়াপাড়া, মনিরামপুর, বাঘারপাড়া, চৌগাছা, কেশবপুর, নড়াইল সদর, কালিয়া, বাগেরহাট সদর, মোড়েলগঞ্জ, মাগুরা সদর, সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া পৌরসভা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, রহনপুর, শিবগঞ্জ, নাচোল, জয়পুরহাট সদর, আক্কেলপুর, কালাই, নওগা সদর, নজিপুর, নাটোর সদর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, নলডাঙ্গা, গোপালপুর, গুরুদাসপুর, পাবনা সদর, ভাঙ্গুড়া, ঈশ্বরদী, চাটমোহর, সাঁথিয়া, সুজানগর, ফরিদপুর, বগুড়া সদর, শেরপুর, সারিয়াকন্দি, গাবতলী, সান্তাহার, কাহালু, ধুনট, নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ, রাজশাহী জেলার কাঁকনহাট, আড়ানী, মুন্ডুমালা, কেশরহাট, গোদাগাড়ী, তাহেরপুর, ভবানীগঞ্জ, তানোর, কাটাখালী, চারঘাট, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, নওহাটা, সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, বেলকুচি ও কাজিপুর পৌরসভা।
ঝালকাঠীর নলছিটি, পিরোজপুর সদর, স্বরূপকাঠী, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, কুয়াকাটা, বরগুনা সদর, বেতাগী, পাথরঘাটা, বরিশালের মুলাদী, গৌরনদী, মেহেন্দীগঞ্জ, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জ, উজিরপুর, ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান।
সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, জগন্নাথপুর, দিরাই, সিলেটের জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ, মৌলভীবাজার সদর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, বড়লেখা, হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা।
কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, উলিপুর, গাইবান্ধা সদর, গোবিন্দগঞ্জ, সুন্দরগঞ্জ, পঞ্চগড় সদর, ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, দিনাজপুর সদর, ফুলবাড়ী, বীরগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর, জলঢাকা, পঞ্চগড় সদর, রংপুরের বদরগঞ্জ, লালমনিরহাট সদর ও পাটগ্রাম পৌরসভা।
Leave a Reply